কম্পিউটার কি? কম্পিউটার কত প্রকার ও কি কি?

বর্তমান বিশ্বে প্রযুক্তিনির্ভর এক নতুন যুগে আমরা ইতিমধ্যেই প্রবেশ করেছি। আর এই প্রযুক্তির অন্যতম প্রধান উপাদান হল কম্পিউটার। আজকের দিনে দৈনন্দিন কাজ থেকে শুরু করে শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা, বিনোদন সবখানেই কম্পিউটারের ব্যবহার অনিবার্য হয়ে উঠেছে। এমন একটি দিনও বর্তমানে সম্ভব নয় সেখানে আমরা কোনো না কোন ভাবে কম্পিউটারের সাহায্য নেওয়ার দরকার পড়বেনা। এমনকি আপনি এখন যে স্মার্ট ফোনটিতে এই লেখাটি পড়ছেন সেটিও কিন্তু ছোট একটি কম্পিউটার!
বর্তমানে এত বেশি কম্পিউটার ব্যবহারের পরও আমাদের অনেকেই এখনও পরিষ্কারভাবে জানেন না আসলে কম্পিউটার কি? এটি আসলে কীভাবে কাজ করে, কম্পিউটার কত প্রকার ও কি কি? এবং কোন কোন ক্ষেত্রেই বা এগুলোর ব্যবহার হয়?
ঠিক ধরেছেন! জ্ঞানী বাবা!’র আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জানবো কম্পিউটার কি, কম্পিউটার কিভাবে কাজ করে? কম্পিউটার কে আবিষ্কার করেন? কম্পিউটার কত প্রকার ও কি কি? থেকে শুরু করে কম্পিউটার সম্পর্কে যাবতীয় বিস্তারিত। তবে আজকের এই আর্টিকেলে মূল প্রতিপাদ্য বিষয় কম্পিউটার কি? কম্পিউটার কত প্রকার ও কি কি? কম্পিউটার কে আবিষ্কার করেন?… এই সকল বিষয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা হবে। তাহলে চলুন, শুরু করা যাক!!!
সূচীপত্রঃ
কম্পিউটার কি? কম্পিউটার কাকে বলে?

কম্পিউটার কি? এই প্রশ্নটিই আমাদের অনেকের মনে সবার আগে আসে, বিশেষ করে আমরা যারা প্রযুক্তি বিষয়ে একদম নতুন। সহজভাবে বললে, কম্পিউটার হলো একটি ইলেকট্রনিক যন্ত্র বা ডিভাইএই এইস যা পূর্বনির্ধারিত নির্দেশনা বা প্রোগ্রাম অনুযায়ী তথ্য গ্রহণ করে, তা প্রক্রিয়াজাত করে এবং ফলাফল প্রদান করে। একটি কম্পিউটার দ্রুত, নির্ভুল ও ধারাবাহিকভাবে কাজ সম্পাদন করতে সক্ষম। এখন প্রশ্ন আসতে পারে কম্পিউটার কিভাবে কাজ করে
কম্পিউটার মূলত তিনটি ধাপে কাজ করে থাকেঃ
- ইনপুট (Input): ব্যবহারকারী কম্পিউটারে তথ্য সরবরাহ করে (যেমন: কিবোর্ড, মাউস)।
- প্রসেসিং (Processing): সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট (CPU) সেই তথ্য বিশ্লেষণ ও গণনা করে।
- আউটপুট (Output): চূড়ান্ত ফলাফল ব্যবহারকারীকে দেখায় (যেমন: মনিটর, প্রিন্টার)।
কম্পিউটার যেকোনো জটিল গাণিতিক সমস্যা দ্রুত সমাধান করতে পারে এবং একইসাথে একাধিক কাজ একযোগে করতে সক্ষম। বর্তমানে কম্পিউটার শুধুএকটি গণনার যন্ত্রই নয়; বরং এটি এখন একটি মাল্টি-ফাংশনাল টুল, যা বিভিন্ন ধরণের তথ্য প্রক্রিয়াকরণ, সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণে ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হয়।
কম্পিউটারের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

আজ যে আমরা এত আধুনিক ও গতিশীল কম্পিউটার ব্যবহার করছি, তার পেছনে রয়েছে এক দীর্ঘে ইতিহাস ও যুগে যুগে হওয়া ধারাবাহিক উন্নয়ন এর গল্প। কম্পিউটার কি?, এই প্রশ্নের উত্তর ভালো করে বুঝতে হলে আমাদের আগে জানতে হবে এর শুরুর গল্প।
প্রাচীন কালের গণনার যন্ত্র
কম্পিউটারের পূর্বসূরি হিসেবে ধরা হয় প্রাচীন চীনা গণনার যন্ত্র অ্যাবাকাস (Abacus)-কে, যা কিনা প্রায় ৫০০০ বছর আগে ব্যবহৃত হতো! যদিও এটি ছিল সম্পূর্ণ ম্যানুয়াল ভাবে পরিচালিত, তবে এটিই পরবর্তীতে আধুনিক কম্পিউটারের ভিত্তি স্থাপন করে। ভাবতে পারছেন?
আধুনিক কম্পিউটারের সূচনা
১৮৩৭ সালে চার্লস ব্যাবেজ (Charles Babbage) “অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন” নামক একটি মেকানিক্যাল কম্পিউটার ডিজাইন করেন। তাকে “কম্পিউটারের জনক (Father of Computer)” বলা হয়। যদিও এটি তার জীবদ্দশায় কখনোই পুরোপুরি নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি, তবে এই ধারণাটিকেই আধুনিক কম্পিউটারের ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
প্রথম ইলেকট্রনিক কম্পিউটার
১৯৪০-এর দশকে আবিষ্কৃত ENIAC (Electronic Numerical Integrator and Computer) ছিল প্রথম পূর্ণাঙ্গ ইলেকট্রনিক ডিজিটাল কম্পিউটার। এটি ছিল অনেক বিশাল আকারের একটি কম্পিউটার। তার সাথে এই কম্পিউটারটি প্রচুর পরিমাণে বিদ্যুৎও খরচ করত।
সময়ের সঙ্গে প্রযুক্তির বিবর্তন
ক্রমাগত প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে কম্পিউটার আজ এখন অনেক ছোট কিন্তু একইসাথে অনেক দ্রুত, শক্তিশালী এবং সহজে বহনযোগ্য হয়েছে। বর্তমানের পার্সোনাল কম্পিউটার (PC), ল্যাপটপ, ট্যাবলেট এমনকি আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোনটিও কিন্তু সেই বিশালাকার ENIAC এর উন্নত রূপ!
আরও পড়ুনঃ কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কি? কত প্রকার ও কি কি? (2025)
কম্পিউটার কত প্রকার ও কি কি?

কম্পিউটার শুধু একটি সাধারণ এক রকম দেখতে যন্ত্র নয়; বর্তমানে কম্পিউটার বিভিন্ন আকার, ক্ষমতা ও কাজের ভিত্তিতে নানা ধরণের হয়ে থাকে। কম্পিউটারকে সাধারণত গঠনের ভিত্তিতে এবং কাজের ভিত্তিতে দুইভাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়।
১. গঠনের ভিত্তিতে কম্পিউটারের প্রকারভেদ
অ্যানালগ কম্পিউটার (Analog Computer)
এই ধরণের কম্পিউটার ধারাবাহিক তথ্য (continuous data) প্রক্রিয়াকরণে ব্যবহৃত হয়। যেমন: তাপমাত্রা, গতি, চাপ ইত্যাদি মাপার কাজে ব্যবহৃত হয়। এটি সাধারণত বিজ্ঞান গবেষণা ও প্রকৌশল কাজের জন্যই বেশি ব্যবহৃত হয়।
ডিজিটাল কম্পিউটার (Digital Computer)
বর্তমান যুগে আমরা সাধারণ কাজে যে কম্পিউটার ব্যবহার করি তাই মুলত ডিজিটাল কম্পিউটার। এটি বাইনারি সংখ্যা (০ ও ১) ব্যবহার করে কাজ করে এবং তথ্যকে সুনির্দিষ্ট আকারে প্রক্রিয়াজাত করে আমাদের আউটপুট দেয়। উদাহরণ: ডেস্কটপ, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন।
হাইব্রিড কম্পিউটার (Hybrid Computer)
নাম দেখেই বুঝতে পারছেন, এই ধরনের কম্পিউটার অ্যানালগ ও ডিজিটাল উভয় বৈশিষ্ট্যের সমন্বয়েই তৈরি হয়। যেমন: হাসপাতালে ব্যবহৃত কম্পিউটারাইজড মেডিকেল যন্ত্র গুলো কিন্তু হাইব্রিড কম্পিউটারের উদাহরণ!
আরও পড়ুনঃ কম্পিউটার ভাইরাস কি? ভয়ঙ্কর ১০ টি কম্পিউটার ভাইরাসের নাম
২. কাজের ভিত্তিতে কম্পিউটারের প্রকারভেদ
এই শ্রেণিবিন্যাসে কম্পিউটারকে গঠন অনুসারে ভাগ না করে তার ক্ষমতা ও ব্যবহার অনুযায়ী ভাগ করা হয়। যেমনঃ
সুপার কম্পিউটার
এটিই বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ও দ্রুততম কম্পিউটার। বিশাল পরিমাণ ডেটা প্রক্রিয়াকরণ ও জটিল বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বেশি ব্যবহৃত হয়। উদাহরণ: ভারতীয় সুপার কম্পিউটার “PARAM”, মার্কিন সুপার কম্পিউটার “Summit” ইত্যাদি।
মেইনফ্রেম কম্পিউটার
এই কম্পিউটার গুলো সাধারণত বিশাল কোম্পানি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানেই বেশি ব্যবহৃত হয়, যেখানে প্রচুর ব্যবহারকারী একসাথে কাজ করে। এটি অনেক তথ্য সংরক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ক্ষমতায় সুপার কম্পিউটারে চেয়ে কম শক্তিশালী হলেও, তুলনা মূলক কম খরচেই মেইনফ্রেম কম্পিউটার পরিচালনা করা যায়।
মিনি কম্পিউটার
মাঝারি আকারের প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য তৈরি এই কম্পিউটারগুলো তুলনামূলকভাবে বেশ ছোট ও কম খরচেও অনেক কার্যকর। কম্পিউটারটি বহু ব্যবহারকারীর কাজ একসাথে পরিচালনা করতে সক্ষম।
পার্সোনাল কম্পিউটার (PC)
পার্সোনাল কম্পিউটার বা পিসিই কিন্তু সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত কম্পিউটার। নাম শুনেই বুঝা যাচ্ছে, এই কম্পিউটারটি মূলত একক ব্যবহারকারীর জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। যেমন: ডেস্কটপ, ল্যাপটপ। এমনকি আপনার হাতের স্মার্ট ফোনটিও কিন্তু একটি ছোট পার্সোনাল কম্পিঊটার!
কম্পিউটারের প্রধান উপাদানসমূহ
কম্পিউটার কি, তা বোঝার জন্য এর গঠন ও উপাদানগুলো জানাও জরুরি। একটি কম্পিউটার সঠিকভাবে কাজ করতে পারে তখনই, যখন এর প্রতিটি অংশ সঠিকভাবে পারস্পরিক সম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করতে পারে। সাধারণভাবে কম্পিউটারের প্রধান উপাদানগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়ঃ
- হার্ডওয়্যার (Hardware)
- সফটওয়্যার (Software)
এছাড়াও ইনপুট, আউটপুট ও প্রসেসিং ইউনিটসহ কম্পিউটারের আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ রয়েছে।
হার্ডওয়্যার (Hardware)
হার্ডওয়্যার হলো মুলত কম্পিউটারের দৃশ্যমান ও স্পর্শযোগ্য অংশ, যেমন: মনিটর, কিবোর্ড, মাউস, প্রিন্টার, মাদারবোর্ড, হার্ডডিস্ক ইত্যাদি। হার্ডওয়্যার ছাড়া কোনো কম্পিউটারকেই কার্যকরভাবে চালানো সম্ভব নয়।
সফটওয়্যার (Software)
সফটওয়্যার হলো অনেক গুলো নির্দেশনার একটি সেট, যা কম্পিউটারকে কীভাবে কাজ করতে হবে তা বলে দেয়। সফটওয়্যার ছাড়া হার্ডওয়্যার দিয়ে কোন কাজ করানো সম্ভব নয়। সফটওয়্যার মুলত দুই প্রকারঃ
- সিস্টেম সফটওয়্যার (যেমন: Windows, Linux)
- অ্যাপলিকেশন সফটওয়্যার (যেমন: Microsoft Word, Google Chrome)
ইনপুট ডিভাইস
এই ডিভাইসগুলো ব্যবহারকারী থেকে কম্পিউটারে তথ্য প্রেরণ করে। যেমনঃ
- কিবোর্ড
- মাউস
- স্ক্যানার
- মাইক্রোফোন
- টাচস্ক্রিন
- ইত্যাদি
আউটপুট ডিভাইস
এই ডিভাইসগুলো কম্পিউটারে প্রক্রিয়াকৃত তথ্য ব্যবহারকারীকে দৃশ্যমান বা শ্রবণযোগ্য আকারে উপস্থাপন করে। যেমনঃ
- মনিটর
- প্রিন্টার
- স্পিকার
- ইত্যাদি
সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট (CPU)
CPU বা Central Processing Unit কে বলা হয় কম্পিউটারের “মস্তিষ্ক”। এটি ইনপুট তথ্যকে প্রক্রিয়াজাত করে আউটপুটে রূপান্তর করে। প্রতিটি CPU মূলত তিনটি প্রধান অংশ নিয়ে গঠিতঃ
- ALU (Arithmetic Logic Unit): গাণিতিক ও যৌক্তিক কাজ করে
- CU (Control Unit): অন্যান্য অংশ নিয়ন্ত্রণ করে
- Registers: সাময়িকভাবে তথ্য সংরক্ষণ করে
এগুলো ছাড়াও RAM, ROM, মাদারবোর্ড, পাওয়ার সাপ্লাই ইত্যাদিও কম্পিউটারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
সব মিলিয়ে, একটি আধুনিক কম্পিউটার সঠিকভাবে কাজ করতে পারে তখনই, যখন এর সবগুলো উপাদান একত্রে সমন্বিতভাবে কাজ করার পরিবেশ পায়। তাই কম্পিউটার কি তা বুঝতে হলে এর প্রতিটি উপাদান সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা জরুরি।
আরও পড়ুনঃ নেটওয়ার্ক টপোলজি কি? কত প্রকার ও কি কি?
কম্পিউটারের সুবিধা ও ব্যবহারে ক্ষেত্র

আজকের দিনে কম্পিউটার আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। শিক্ষা থেকে শুরু করে চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে বিনোদন, প্রতিটি ক্ষেত্রেই কম্পিউটারের গুরুত্ব অপরিসীম। তাহলে চলুন কম্পিউটারের কিছু সুবিধা ও ব্যবহারের ক্ষেত্র সম্পর্কে এক নজরে জেনে নিই।
কম্পিউটারের সুবিধা কি?
দ্রুততা
কম্পিউটার অতি দ্রুততার সঙ্গে বিপুল পরিমাণ তথ্য বিশ্লেষণ ও প্রক্রিয়া করতে পারে, যা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়।
নির্ভুলতা
সঠিক নির্দেশনা দিলে কম্পিউটার কখনো ভুল করে না। কম্পিউটার খুবই নির্ভরযোগ্যভাবে নির্ভুল ফলাফল দিতে পারে।
মাল্টিটাস্কিং
একই সময়ে একাধিক কাজ যেমন: গান শোনা, টাইপ করা, ইমেইল পাঠানো , সবই অনেক সহজে সম্ভব।
তথ্য সংরক্ষণ
কম্পিউটার বিপুল পরিমাণ তথ্য দীর্ঘ সময় ধরে সংরক্ষণ করতে পারে এবং প্রয়োজনমতো দ্রুত খুঁজে পেতেও সাহায্য করে।
স্বয়ংক্রিয়তা
একবার প্রোগ্রাম সেট করে দিলে কম্পিউটার নিরবিচারে সেই কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে করতে পারে।
কম্পিউটারের কোথায় ব্যবহৃত হয়?
শিক্ষা ক্ষেত্রে
বর্তমানে শিক্ষার্থীরা অনলাইন ক্লাস, ভিডিও লেকচার, প্রজেক্ট তৈরি ও গবেষণার কাজে অনেক বেশি পরিমাণে কম্পিউটার ব্যবহার করছে। ডিজিটাল শিক্ষা কার্যক্রমে কম্পিউটার একটি অপরিহার্য উপাদানে পরিণত হয়েছে।
ব্যবসা ও অফিসে
বিলিং, হিসাব-নিকাশ, রিপোর্ট তৈরি, ডেটা ম্যানেজমেন্ট, সবকিছুতে এখন কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়। ফলে সময় ও খরচ দুটোই বাঁচানো যাচ্ছে।
স্বাস্থ্যসেবায়
রোগ নির্ণয়, রেকর্ড সংরক্ষণ, অপারেশনের পরিকল্পনা ইত্যাদিতে এখন আধুনিক কম্পিউটার প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে।
ব্যাংকিং ও লেনদেনে
অনলাইন ব্যাংকিং, এটিএম, পেমেন্ট গেটওয়ে, সবকিছুই বর্তমানে কম্পিউটার নির্ভর হয়ে গেছে।
বিনোদনে
গান শোনা, সিনেমা দেখা, ভিডিও গেম খেলা, ইউটিউব, ফেসবুক, রিল এসব বিনোদনের আধুনিক মাধ্যমগুলোর পেছনেও রয়েছে কম্পিউটার প্রযুক্তি।
কম্পিউটার কি সীমাবদ্ধতা বিহীন?
যদিও কম্পিউটার আমাদের জীবনে বিপ্লব এনে দিয়েছে, তথাপি এর কিছু সীমাবদ্ধতা বা দুর্বলতাও রয়েছে। কম্পিউটার কি তা বোঝার পাশাপাশি এর ভালো-মন্দ দুই দিকই জানা গুরুত্বপূর্ণ।
নিচে কম্পিউটারের কিছু প্রধান সীমাবদ্ধতা তুলে ধরা হলোঃ
১. সৃজনশীলতার অভাব
কম্পিউটার নিজে থেকে নতুন কোনো চিন্তা করতে পারে না। এটি শুধুমাত্র পূর্বনির্ধারিত নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে। মানুষের মতো কল্পনা বা আবিষ্কার করার ক্ষমতা নেই। (তবে এখানে এয়াই (AI) প্রযুক্তির কথা বলা হচ্ছে না)
২. আবেগবিহীন যন্ত্র
কম্পিউটারে কোনো অনুভূতি বা আবেগ নেই। এটি ভালো-মন্দ, ন্যায়-অন্যায় বুঝতে পারে না, শুধুমাত্র কোড অনুযায়ী কাজ করতে পারে।
৩. বিদ্যুৎনির্ভরতা
কম্পিউটার চালানোর জন্য নির বিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ এর প্রয়োজন হয়। বিদ্যুৎ না থাকলে কম্পিউটার সম্পূর্ণভাবে অচল হয়ে পড়ে।
৪. নিরাপত্তা ঝুঁকি
কম্পিউটার-নির্ভর সিস্টেমে হ্যাকিং, ভাইরাস, ডেটা চুরি ইত্যাদি নিরাপত্তাজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। এটি ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক গোপনীয়তা নষ্ট করতে পারে।
৫. কর্মসংস্থানে প্রভাব
অনেক ক্ষেত্রে অটোমেশন বা স্বয়ংক্রিয়তা বৃদ্ধির ফলে মানুষের কাজ কমে যাচ্ছে। এর ফলে কিছু ক্ষেত্রে চাকরি হারানোর ঝুঁকিও তৈরি হচ্ছে।
৬. স্বাস্থ্যগত সমস্যা
ঘণ্টার পর ঘণ্টা কম্পিউটারে কাজ করলে চোখের ক্ষতি, ঘাড় ও পিঠে ব্যথা, মানসিক চাপ ইত্যাদির প্রকোপ বেশি হতে পারে। বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের ক্ষেত্রে এই ব্যপারটি বেশি ক্ষতিকর হতে পারে।
সার্বিকভাবে বলতে গেলে, কম্পিউটার কি? এর উত্তরে বলতে হবে, এটি অত্যন্ত শক্তিশালী একটি প্রযুক্তি, যা আমাদের জীবনকে একইসাথে সহজ, দ্রুত ও উন্নত করেছে। তবে এর কিছু সীমাবদ্ধতা ও ঝুঁকিও রয়েছে, যেগুলোর প্রতি আমাদের সচেতন থাকা প্রয়োজন।
উপসংহার
বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর বিশ্বে কম্পিউটার একটি অপরিহার্য উপাদান। এই যন্ত্রটি বর্তমানে আমাদের জীবনের প্রায় সব ক্ষেত্রেই ভূমিকা রাখছে , শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা, গবেষণা কিংবা বিনোদন, সর্বত্রই এর ব্যাপক ব্যবহার এখন লক্ষ্য করা যায়।
জ্ঞানী বাবা!’র আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জানলাম কম্পিউটার কি?, কম্পিউটার কত প্রকার ও কি কি?, কম্পিউটার কিভাবে কাজ করে, কম্পিউটার কি কি উপাদানসমূহ নিয়ে গঠিত?, সুবিধা-অসুবিধা থেকে শুরতু করে কম্পিউটার কি? এই প্রশ্নের বিস্তারিত উত্তর।
আজকের শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বৃদ্ধ মানুষ পর্যন্ত সবাইকে প্রযুক্তি সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে হলে আমাদের প্রথমেই জানতে হবে , কম্পিউটার কি? কম্পিউটার কিভাবে ব্যবহার করলে তা আমাদের জীবনকে আরও সহজ ও উন্নত করতে পারে।
পরিশেষে এতটুকুই বলব, আশা করি জ্ঞানী বাবা!‘র আজকের এই লেখাটি আপনার ভালো লেগেছে। যদি তাই হয়ে থাকে, আজকের এই লেখাটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে , একটু হলেও উপকারে এসে থাকে তবে অনুরোধ করব, সামাজিক মাধ্যমে এই ব্লগটি শেয়ার করুন। আর কমেন্ট সেকশনে আপনার মূল্যবান মতামত রেখে যেতে একদম ভুলবেন না কিন্তু!!!