রক্তের এলার্জি দূর করার উপায় জেনে নিন

আপনি কি হঠাৎ করে চুলকানি, ত্বকে র্যাশ বা ফোলাভাবের সমস্যায় পড়ছেন? নাকি মাঝেমধ্যেই শরীরে অদ্ভুত অস্বস্তি অনুভব করেন, কিন্তু ধরতে পারছেন না এর আসল কারণটা কী? যদি এমনটা হয়ে থাকে, তাহলে রক্তের এলার্জির বিষয়টি একবার ভেবে দেখা দরকার আপনার।
আসলে এলার্জি বলতে আমরা প্রায়শই চুলকানি বা হাঁচি-কাশির কথাই বুঝি। কিন্তু জেনে অবাক হবেন, অনেক সময় আমাদের শরীরের অভ্যন্তরেই এমন কিছু পরিবর্তন হয়, যা রক্তের ভেতরেই এলার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। আর এই রক্তে এলার্জির সমস্যা খুব সহজেই আপনার কাছে উপেক্ষিত থেকে যেতে পারে, যতক্ষণ না তা বড় কোনো সমস্যার রূপ নেয়। তাই আপনার রক্তের এলার্জি ও রক্তের এলার্জি দূর করার উপায় সম্পর্কে সচেতন জ্ঞান রাখা উচিত।
জ্ঞানী বাবা!’র আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব রক্তের এলার্জি দূর করার উপায়’ সহ এলার্জি কী? রক্তের এলার্জি কী? রক্তের এলার্জির লক্ষণ কী কী ? রক্তে এলার্জি থাকলে কি কি খাওয়া যাবে না? , রক্তে এলার্জি কমানোর ঘরোয়া উপায়, কি খেলে রক্তে এলার্জি কমে থেকে শুরু করে রক্তের এলার্জি দূর করার উপায় সম্পর্কে যাবতীয় সব কিছু। তাহলে চলুন, “রক্তের এলার্জি দূর করার উপায়” সম্পর্কিত আলোচনা শুরু করা যাক!
সূচীপত্রঃ
রক্তে এলার্জি কী? রক্তের এলার্জি দূর করার উপায়

রক্তের এলার্জি দূর করার উপায় জানার আগে আমাদের জেনে নেওয়া উচিত রক্তের এলার্জি আসলে কী? আমরা সাধারণত এলার্জি বলতে বুঝি ধুলাবালি বা খাবারে প্রতিক্রিয়া – যেমন হাঁচি বা কাশি, চুলকানি বা ত্বকে র্যাশ। কিন্তু কখনো কি ভেবেছেন, শরীরের রক্তের মধ্যেও এলার্জির প্রতিক্রিয়া হতে পারে? হ্যাঁ, এটাকে বলা হয় “রক্তে এলার্জি” বা “Blood Allergy”, এবং এটি আসলে শরীরের ইমিউন সিস্টেমের একটি অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া মাত্র।
রক্তে এলার্জি কেন ও কীভাবে হয়?
আমাদের শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা (ইমিউন সিস্টেম) সবসময় বাইরের ক্ষতিকর জিনিস যেমন ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে। কিন্তু কারো কারো ক্ষেত্রে এই ইমিউন সিস্টেম অনেক সাধারণ জিনিস যেমন কিছু কিছু খাবার, ধুলা, বা এমনকি ওষুধকেও ‘বিপজ্জনক’ ভেবে প্রতিক্রিয়া শুরু করে। এই প্রতিক্রিয়ার সময় শরীর হিস্টামিন নামক একটি রাসায়নিক নিঃসরণ করে, যা শরীরে নানা রকম উপসর্গ তৈরি করে যেমন চুলকানি, র্যাশ, ফোলা বা শ্বাসকষ্ট।
আরও পড়ুনঃ চর্ম এলার্জি দূর করার উপায় কি? এলার্জির কারণ ও প্রতিকার
রক্তে এলার্জির লক্ষণ কী?
রক্তে এলার্জি হলে শরীর আমাদের অনেকভাবে সংকেত দিতে শুরু করে। কিন্তু সমস্যা হলো, আমরা প্রায়ই সেই সংকেতগুলোকে অন্য কোনো সাধারণ অসুস্থতা ভেবে উপেক্ষা করে বসি। অথচ আগেভাগে এই লক্ষণগুলো চিনে নিতে পারলে অনেক ঝামেলা এড়ানো যায়। তাই চলুন রক্তের এলার্জি দূর করার উপায় জানার আগে জেনে নিই রক্তের
১. ত্বকে চুলকানি ও র্যাশ
এলার্জির সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণগুলোর একটি হলো ত্বকে চুলকানি ও লালচে র্যাশ। অনেক সময় দেখা যায়, হঠাৎ করেই শরীরের কোনো অংশে ছোট ছোট লাল দানা উঠে আসে এবং প্রচণ্ড চুলকায়।
২. হাইভস বা ফোলা ভাব
অনেক সময় শরীরে ‘হাইভস’ নামে পরিচিত ফুলে ওঠা অংশ দেখা যায়। এটা ত্বকের ওপর ফুলে ওঠা সাদা বা লালচে এলাকা, যা অল্প সময়েই বড় আকার নিতে পারে।
৩. নাক দিয়ে পানি পড়া ও চোখ চুলকানো
রক্তে এলার্জি থাকলে শুধু ত্বক নয়, নাক ও চোখেও উপসর্গ দেখা দিতে পারে। অনেক সময় মনে হবে ঠান্ডা লেগেছে, কিন্তু আসলে তা এলার্জি।
৪. শ্বাসকষ্ট বা বুক ধড়ফড় করা
রক্তে গুরুতর এলার্জি থাকলে তা শ্বাসনালিতেও প্রভাব ফেলতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে শ্বাস নিতে কষ্ট হয় বা বুক ধড়ফড় করতে পারে।
৫. মাথা ঘোরা বা দুর্বলতা
রক্তে এলার্জির ফলে শরীরে হঠাৎ করে রক্তচাপ কমে যেতে পারে, যার ফলে মাথা ঘোরা, দুর্বল লাগা বা চোখে অন্ধকার দেখা দিতে পারে।
৬. অ্যানাফাইল্যাক্সিস (এলার্জির চরম অবস্থা)
এটা সবচেয়ে ও মারাত্মক অবস্থা, যেখানে এলার্জিক প্রতিক্রিয়া মাত্রাতিরিক্ত হয়ে শরীরের একাধিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গে সমস্যা তৈরি করে।
লক্ষণঃ
- গলা ফুলে যাওয়া
- শ্বাস বন্ধ হয়ে আসা
- রক্তচাপ দ্রুত নিচে নেমে যাওয়া
- অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
রক্তে এলার্জির সম্ভাব্য কারণ

আমাদের শরীর প্রতিনিয়ত বাইরের অনেক কিছুর সংস্পর্শে আসে যেমনঃ খাবার, ওষুধ, আবহাওয়া, জীবাণু ইত্যাদি। কারো কারো শরীর কিছু অতি সাধারণ জিনিসকেও ভুলবশত ‘বিপজ্জনক’ মনে করে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করে। এটাই মূলত এলার্জি। রক্তের এলার্জি দূর করার উপায় জানার আগে রক্তের এলার্জির আসল কারণ নেয়া উচিত। তাই চলুন জেনে নিই রক্তের এলার্জির সম্ভাব্য কারণ সমূহ।
১. খাবারের প্রতিক্রিয়া
সাধারণত যেসব খাবারে এলার্জি বেশি দেখা যায়ঃ
- গরুর দুধ বা দুধজাত খাবার
- ডিম
- বাদাম (বিশেষ করে কাজু, চিনাবাদাম)
- সামুদ্রিক মাছ ও ঝিনুক
- গম (gluten allergy)
- সয়াবিন
২. ওষুধজনিত এলার্জি
যেসব ওষুধ বেশি দায়ী হতে পারেঃ
- পেনিসিলিন ও অন্যান্য অ্যান্টিবায়োটিক
- পেইনকিলার (যেমন আইবুপ্রোফেন, ন্যাপ্রোসেন)
- কিছু ভ্যাকসিন
- স্যালফা জাতীয় ওষুধ
৩. পরিবেশগত কারণ
আবহাওয়া বা আশেপাশের কিছু উপাদান থেকেও রক্তে এলার্জি হতে পারে। এটি সাধারণত বায়ুতে থাকা ধূলাবালি, ফুলের রেণু বা ছত্রাকের কারণে হয়ে থাকে। যেমনঃ
- ঘরের ধুলা বা বিছানার ধুলাবালি
- পোষা প্রাণীর লোম
- ফুলের রেণু (Pollen)
- ছত্রাক বা ফাঙ্গাস
৪. পোকামাকড়ের কামড়
মৌমাছি, পিঁপড়া, মশা বা অন্য পোকামাকড় কামড় দিলে রক্তে তৎক্ষণাত প্রতিক্রিয়া শুরু হতে পারে। তাই সচেতন থাকা উচিত।
৫. জেনেটিক বা বংশগত কারণ
আপনার পরিবারের কারো যদি এলার্জি থেকে থাকে তাহলে আপনার ক্ষেত্রেও রক্তে এলার্জির ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। ইমিউন সিস্টেম কিন্তু অনেকটাই জেনেটিক্যালি প্রভাবিত হয়।
৬. অতিরিক্ত স্ট্রেস ও ইমিউন ডিসঅর্ডার
দীর্ঘমেয়াদী মানসিক চাপ, উদ্বেগ বা অনিদ্রা আমাদের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল করে ফেলে, যার ফলে শরীর অস্বাভাবিকভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করে। তাই, গুগলে রক্তের এলার্জি দূর করার উপায় খোঁজার আগে নিজের মানসিক চাপ কমানোর উপায় খুজুন!
আরও পড়ুনঃ লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিন
রক্তের এলার্জি দূর করার উপায়
রক্তের এলার্জি দূর করার উপায় বা চিকিৎসা নির্ভর করে আপনার শরীরের লক্ষণ, কারণ ও প্রতিক্রিয়ার মাত্রার ওপর। চিকিৎসকের পরামর্শে নিচের ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে:
১. অ্যান্টিহিস্টামিন ওষুধ
এটি এলার্জির মূল রাসায়নিক “হিস্টামিন”-এর কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। ফলে চুলকানি, র্যাশ বা হাঁচির মতো উপসর্গ অনেকটাই কমে আসে।
সাধারণ কিছু অ্যান্টিহিস্টামিনঃ
- Loratadine
- Fexofenadine
- Cetirizine
❗ কিন্তু মনে রাখবেন, নিজে থেকে ওষুধ নেওয়া যাবেনা, সবসময় চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
২. স্টেরয়েড প্রয়োগ (প্রয়োজনে)
গুরুতর রক্তে এলার্জির ক্ষেত্রে চিকিৎসক কিছু সময়ের জন্য স্টেরয়েড ওষুধ দিতে পারেন, ইনজেকশন বা ট্যাবলেট আকারে।
৩. ইপিনেফ্রিন ইনজেকশন (Epipen)
যাদের গুরুতর অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া হয় (যেমন অ্যানাফাইল্যাক্সিস), তাদের সবসময় নিজের সঙ্গে EpiPen রাখা উচিত (চিকিতসকের পরামর্বশে)।
৪. ইমিউনোথেরাপি
এই চিকিৎসাটি দীর্ঘমেয়াদী কিন্তু কার্যকর। এতে নির্দিষ্ট পরিমাণ এলার্জেন বারবার শরীরে দিয়ে ধীরে ধীরে সহ্যক্ষমতা গড়ে তোলা হয়।
আরও পড়ুনঃ নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিন
রক্তে এলার্জি থাকলে কী কী খাওয়া যাবে না?

ধরুন আপনি ঠিকঠাক চিকিৎসা নিচ্ছেন, নিয়মিত ওষুধ খাচ্ছেন, কিন্তু খাওয়াদাওয়ায় ভুল করছেন তাহলে কিন্তু রক্তে এলার্জির উপসর্গ আবার ফিরে আসতে পারে। তাই শুধু চিকিৎসা নয়, যথাযথ খাদ্যাভ্যাসও খুব জরুরি।
চলুন, জেনে নিই রক্তে এলার্জির সময় কী কী খাবার খাওয়া যাবে নাঃ
১. বাদামজাতীয় খাবার
বিশেষ করে চিনাবাদাম, কাজুবাদাম, আখরোট ইত্যাদি অনেকের শরীরে মারাত্মক অ্যালার্জি সৃষ্টি করে। এমনকি চিকিৎসকদের মতে, বাদামের গন্ধেও কেউ কেউ প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারেন।
এড়িয়ে চলুনঃ
- চিনাবাদাম (peanut butter সহ)
- কাজু, পেস্তা, আখরোট
- বাদাম মেশানো চকলেট বা বিস্কুট
২. দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার
দুধে থাকা একটি প্রোটিন (কেসিন) অনেক সময় রক্তে অ্যালার্জি সৃষ্টি করে। যদিও শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয়, তবে প্রাপ্তবয়স্কদেরও হতে পারে।
এড়িয়ে চলুনঃ
- গরুর দুধ
- ঘি, মাখন
- চিজ, পনির
- আইসক্রিম
৩. সামুদ্রিক মাছ ও ঝিনুক
সামুদ্রিক খাবারে থাকা প্রোটিন ও আয়োডিন অনেকের শরীরে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। তাই সমস্যা থাকলে না খাওয়াই ভালো।
এড়িয়ে চলুনঃ
- চিংড়ি, লবস্টার, ঝিনুক
- টুনা, সালমন
- শুকনা মাছ
৪. গ্লুটেনসমৃদ্ধ খাবার
গমজাত খাবারে থাকা গ্লুটেন কারো কারো শরীরে ইমিউন সিস্টেমের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে, যা রক্তে অ্যালার্জির লক্ষণ বাড়িয়ে দিতে পারে।
এড়িয়ে চলুনঃ
- রুটি, পরোটা, বিস্কুট
- পাস্তা, পিজ্জা
- বেকারি আইটেম
৫. ডিম
বিশেষ করে ডিমের সাদা অংশে থাকা প্রোটিন অনেক সময় রক্তে এলার্জির কারণ হয়। আপনার এই সমস্যা থাকলে এড়িয়ে চলাই উত্তম।
এড়িয়ে চলুনঃ
- সিদ্ধ/ভাজা ডিম
- ডিম দিয়ে তৈরি কেক, মায়োনিজ
আরও পড়ুনঃ সেরা ১০ টি কিডনি ভালো রাখার উপায়
৬. প্রক্রিয়াজাত খাবার
বাজারে পাওয়া অনেক প্রক্রিয়াজাত খাবারে প্রিজারভেটিভ, কৃত্রিম রঙ, ফ্লেভার থাকে যা আপনার অ্যালার্জি ট্রিগার করতে পারে।
এড়িয়ে চলুনঃ
- চিপস, চানাচুর
- ইনস্ট্যান্ট নুডলস
- সফট ড্রিংক, ক্যান্ডি
রক্তের এলার্জি দূর করার উপায় (ঘরোয়া উপায়)
আমরা অনেকেই রক্তে এলার্জি ধরা পড়লে ভয় পেয়ে যাই। ভাবি, বুঝি এখন থেকে কেবল ওষুধ আর ডাক্তার কাছেই যাওয়া আসা করতে হবে! কিন্তু সত্যি বলতে, কিছু সহজ ঘরোয়া উপায় রক্তে এলার্জির উপসর্গ কমাতে বেশ কার্যকর। রক্তের এলার্জি দূর করার উপায় হিসেবে নিচে কিছু ঘরোয়া উপায় তুলে ধরা হলোঃ
১. হলুদের দুধ
হলুদে রয়েছে প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান যা শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং এলার্জি প্রতিক্রিয়া কমাতে সাহায্য করে।
কীভাবে তৈরি করবেন:
- ১ গ্লাস গরম দুধে ১ চা চামচ খাঁটি হলুদ গুঁড়া মেশান।
- চাইলে সামান্য মধু মেশাতে পারেন।
- প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে পান করুন।
❗ দুধে অ্যালার্জি থাকলে হলুদ গুঁড়া গরম পানিতে মিশিয়ে নিন।
২. খাঁটি মধু
মধুতে প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিহিস্টামিন উপাদান রয়েছে। এলার্জির বিরুদ্ধে এটি দেহের প্রতিরক্ষা শক্তি বাড়ায়।
ব্যবহার
- প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১ চা চামচ খাঁটি মধু খান।
- চাইলে কুসুম গরম পানিতে মিশিয়েও খেতে পারেন।
৩. রসুন
রসুনের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও ডিটক্স উপাদান। এটি শরীর থেকে অপ্রয়োজনীয় টক্সিন দূর করে ও এলার্জি প্রতিক্রিয়া হ্রাস করে।
ব্যবহারঃ
- সকালে খালি পেটে ১-২ কোয়া কাঁচা রসুন চিবিয়ে খান।
- না পারলে, রান্নায় বেশি করে রসুন ব্যবহার করুন।
৪. আদা চা
আদা প্রাকৃতিকভাবে শরীরকে উষ্ণ করে, হিস্টামিনের প্রভাব কমায় এবং রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
কীভাবে তৈরি করবেন:
- এক কাপ গরম পানিতে ১ চা চামচ আদা কুচি ফুটিয়ে নিন।
- চাইলে লেবুর রস ও সামান্য মধু মেশাতে পারেন।
- দিনে ১–২ বার এই চা পান করতে পারেন।
৫. লেবুর পানি
লেবুতে থাকা ভিটামিন C শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে এবং রক্তের টক্সিন বের করে দেয়।
ব্যবহারঃ
- সকালে খালি পেটে এক গ্লাস গরম পানিতে আধা লেবুর রস মেশান।
- চাইলে সামান্য মধুও মেশাতে পারেন।
৬. তেঁতুল বা মেথি ভেজানো পানি
তেঁতুল বা মেথির পানি রক্ত পরিষ্কার করতে সহায়তা করে এবং এলার্জির উপসর্গ কমায়।
ব্যবহারঃ
- রাতে ১ চা চামচ মেথি ১ গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখুন।
- সকালে পানি ছেঁকে খালি পেটে পান করুন
কখন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যাবেন?
যদি নিচের যেকোনো একটি ঘটে, তাহলে সাধারণ ডাক্তার নয়, সরাসরি একজন অ্যালার্জি বিশেষজ্ঞ বা ইমিউনোলজিস্টের কাছে যানঃ
- নতুন কোনো খাবার খেলেই প্রতিক্রিয়া হচ্ছে
- শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া
- মুখ, ঠোঁট, চোখ বা গলা ফুলে যাওয়া
- সারাশরীরে চুলকানি বা লালচে র্যাশ
- মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
- দীর্ঘদিন ধরে উপসর্গ স্থায়ী হওয়া
- একাধিক অ্যালার্জি আছে (যেমন: খাবার + ধূলা + ঠান্ডা)
- অ্যালার্জির জন্য ঘন ঘন ওষুধ বদলাতে হচ্ছে
- অ্যালার্জি ট্রিগার চিহ্নিত করতে পারছেন না
আরও পড়ুনঃ সেরা ১৫ টি দ্রুত ওজন কমানোর উপায়…
জরুরি প্রয়োজনে কী করবেন?
- সঙ্গে এন্টিহিস্টামিন ওষুধ রাখুন (যেমন: ফেক্সোফেনাডিন, সিটিরিজিন – অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শে)
- কারো যদি অ্যানাফাইল্যাক্সিস থেক থাকে, তাকে সবসময় EpiPen (ইনজেকশন) রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়
- হাসপাতালের নিকটস্থ লোকেশন জেনে রাখুন – যেন দেরি না হয়
শেষ কথা
জ্ঞানী বাবা!’র আজকের আর্টিকেলে এলার্জি কী, এলার্জি কাকে বলে, এলার্জির লক্ষণ, বিশেষ করে রক্তের এলার্জিত কারণ, রক্তের এলার্জি দূর করার উপায়, ঘরোয়া পদ্ধতিতে রক্তের এলার্জি দূর করার উপায়, রক্তের এলার্জির সমস্যা নিয়ে যাবতীয় তথ্যসহ রক্তের এলার্জি দূর করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে। আশা করি পাঠক জ্ঞানী বাবা!’র আজকের এই লেখা থেকে বেশ ভালো ভাবেই রক্তের এলার্জি দূর করার উপায় সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। যদি তাই হয়ে থাকে, যদি আজকের লেখাটি কিছুটা হলেও আপনার ভালো লেগে থাকে, উপকারে এসে থাকে, তাহলে অনুরোধ করব আমাদের এই লেখাটি আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন। আর আপনার অভিজ্ঞতা কমেন্ট সেকশোনে আমাদের জানাতে ভুলবেন না কিন্তু!!!