চর্ম এলার্জি দূর করার উপায় কি? এলার্জির কারণ ও প্রতিকার

সময় লাগবেঃ 9 min

আজকের এই দিনে আমাদের অনেকেই নিয়মিত হাঁচি-কাশি, ত্বকে চুলকানি বা চোখে পানি পড়ার মতো সমস্যায় ভুগছেন। প্রথমে এটিকে আমরা সাধারণ ঠান্ডা বা ধুলাবালির প্রভাব বলে মনে করলেও, বাস্তবে এটি হতে পারে এলার্জি নামক এক অস্বস্তিকর ও বিরক্তিকর এক সমস্যা। এলার্জি আমাদের জীবনে একটি খুব পরিচিত সমস্যা যা কিনা শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ—সব বয়সের মানুষের মধ্যেই দেখা যায়। কেউ খাদ্যে এলার্জিক, কেউবা ধুলাবালিতে, আবার কেউ ফুলের গন্ধ বা পশুপাখির লোম থেকেও আক্রান্ত হন এলার্জিতে।

আমাদের মধ্যে অনেকেই ভাবেন, “চর্ম এলার্জি দূর করার উপায় কি?” , সত্যি কি এটি পুরোপুরি নিরাময় করা সম্ভব? নাকি আজীবন এই সমস্যার সঙ্গেই মানিয়ে নিতে হবে? এই প্রশ্নগুলো আজকাল খুবই সাধারণ হয়ে উঠেছে। জ্ঞানী বাবা!‘র এই আর্টিকেলে আমরা জানব এলার্জির প্রকৃত কারণ, এলার্জির ধরন এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়—চর্ম এলার্জি দূর করার উপায় কি তা নিয়ে বিস্তারিত। তো চলুন, শুরু করা যাক!

সূচীপত্র দেখুন

সূচীপত্রঃ

এলার্জি কী? এলার্জি কাকে বলে?

একদম সহজ কথায়, এলার্জি হলো আমাদের শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার (ইমিউন সিস্টেম) একটি অতিপ্রতিক্রিয়া। অর্থাৎ যখন আমাদের দেহ এমন কোনো উপাদানের সংস্পর্শে আসে যেটিকে শরীর ক্ষতিকর বলে ভুলভাবে চিনে ফেলে, তখনই এলার্জিক প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। এই উপাদানগুলোকে বলা হয় অ্যালার্জেন। এগুলো সাধারণত ক্ষতিকর নয়, যেমন: ধুলাবালি, পরাগরেণু, পশুর লোম, কিছু খাবার বা ওষুধ ইত্যাদি কিন্তু শরীর ভুল করে এগুলোকেই শত্রু ভাবতে শুরু করে।

যখন কোনো অ্যালার্জেন আমাদের শরীরে প্রবেশ করে, তখন দেহের ইমিউন সিস্টেম হিস্টামিন নামক একটি রাসায়নিক নির্গত করে, যা শরীরে বিভিন্ন উপসর্গ তৈরি করে। যেমনঃ

আরও পড়ুনঃ জেনে নিন ঠান্ডা পানিতে লেবু খাওয়ার উপকারিতা

  • বারবার হাঁচি বা কাশি হওয়া
  • নাক বন্ধ বা পানি পড়া
  • চোখ চুলকানো বা লাল হয়ে যাওয়া
  • ত্বকে র‍্যাশ বা চুলকানি
  • শ্বাসকষ্ট বা অ্যাজমার মতো সমস্যা

এলার্জি একেক জনের শরীরে একেকভাবে প্রকাশ পায়। কারো ক্ষেত্রে এটি মৌসুমী, যেমন বসন্ত বা গ্রীষ্মকালে বাড়ে, আবার কারো ক্ষেত্রে সারা বছরই কিছু নির্দিষ্ট উপাদানের জন্য সমস্যা হতে পারে।

এলার্জি সমস্যা সম্পূর্ণরূপে সংক্রামক নয়, অর্থাৎ একজনের এলার্জি আরেকজনের মধ্যে ছড়ায় না। তবে, অনেক সময় বংশগতভাবে এলার্জি হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। অর্থাৎ, যদি পরিবারের কারো এলার্জি থাকে, তাহলে সন্তানদের মধ্যেও তা দেখা দিতে পারে।

চর্ম এলার্জি দূর করার উপায় | এলার্জির কারণসমূহ

চর্ম এলার্জি দূর করার উপায় কি

চর্ম এলার্জি দূর করার উপায় কি তা জানার আগে জেনে নেওয়া দরকার এলার্জির কারণ কি? এলার্জি কেবল বাইরের কোনো বস্তু বা খাবারের প্রতিক্রিয়াই নয়, বরং এটি শরীরের ভেতরের ইমিউন সিস্টেমের একটি স্বতন্ত্র প্রতিক্রিয়া। অনেক সময় খুব সাধারণ কোনো বস্তু, যেমন ধুলো, ফুলের গন্ধ বা দুধ খাওয়ার পরেও শরীর প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। চলুন জেনে নিই এলার্জির পেছনে থাকা মূল কারণগুলোঃ

১. বংশগত বা জেনেটিক কারণ

এলার্জির অন্যতম বড় কারণ হলো বংশগত প্রভাব। যদি কারো মা-বাবা বা নিকটাত্মীয় কারো এলার্জি থাকে, তাহলে সেই ব্যক্তির মধ্যেও এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। এটি এক প্রকার “অ্যাটোপিক প্রবণতা” হিসেবে ধরা হয়, যার ফলে শরীর অতিসংবেদনশীল হয়ে পড়ে।

২. পরিবেশগত কারণ

বায়ু দূষণ, ধুলাবালি, ধোঁয়া, ফুলের পরাগরেণু, পোষা প্রাণীর লোম, ঘরের ছাঁচ, এবং রাসায়নিক সুগন্ধি,এইসবই এলার্জির বড় কারণ হতে পারে। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে বসবাসকারীদের মাঝে এই ধরনের এলার্জি বেশি দেখা যায়। এমনকি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরেও ধুলা বা ফাঙ্গাস জন্ম নিতে পারে, যা অজান্তেই সমস্যা তৈরিকরতে পারে।

৩. দুর্বল ইমিউন সিস্টেম

শিশু বা অসুস্থ ব্যক্তিদের ইমিউন সিস্টেম যদি স্বাভাবিকের চেয়ে দুর্বল হয়, তাহলে তাদের শরীর সহজেই অ্যালার্জেনের প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। কম ঘুম, দুশ্চিন্তা বা অতিরিক্ত পরিশ্রমেও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে, যা এলার্জির প্রবণতা বাড়ায়।

আরও পড়ুনঃ লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিন

৪. অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস

প্রক্রিয়াজাত খাবার, অতিরিক্ত চিনি, কৃত্রিম রঙ ও সংরক্ষকযুক্ত খাবার শরীরের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে। অনেক সময় দুধ, ডিম, বাদাম, গম বা সয়াবিনের মতো নির্দিষ্ট খাবার কারো কারো শরীরে এলার্জির সৃষ্টি করতে পারে। একে বলা হয় ফুড অ্যালার্জি।

৫. অতিরিক্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা (Hygiene Hypothesis)

আধুনিক যুগে আমরা অনেক বেশি জীবাণুমুক্ত থাকার চেষ্টা করি। অতিরিক্ত সাবান, জীবাণুনাশক বা অ্যান্টিসেপটিক ব্যবহারের ফলে শিশুরা প্রাকৃতিকভাবে জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার সুযোগ পায় না। ফলে তাদের শরীর পরে সাধারণ জিনিসেও অতিপ্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করে।

৬. ঋতু পরিবর্তন ও আবহাওয়ার প্রভাব

বসন্ত বা শীতকালে গাছের ফুল ও ঘাস থেকে নির্গত হওয়া পরাগরেণু অনেকের মাঝে মৌসুমি এলার্জির সৃষ্টি করে। যাকে সাধারণত হে ফিভার বলা হয়। আবহাওয়ার আচমকা পরিবর্তন অনেকের শরীরে অস্বস্তি ও চুলকানি সৃষ্টি করে।

৭. কিছু ওষুধ ও রাসায়নিক পদার্থ

পেনিসিলিন জাতীয় কিছু অ্যান্টিবায়োটিক, ব্যথানাশক ওষুধ বা ভ্যাকসিনও কারো কারো শরীরে এলার্জিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। পাশাপাশি প্রসাধনী দ্রব্য, চুলের রঙ, সাবান বা লোশন থেকেও ত্বকে এলার্জি হতে পারে।

এলার্জি দূর করার উপায় কি? চর্ম এলার্জি দূর করার উপায়

অনেকেই ভাবেন, এলার্জি কি পুরোপুরি দূর করা সম্ভব? উত্তর হলো: সঠিক অভ্যাস ও প্রয়োজনে চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে এলার্জির সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, এমনকি অনেক ক্ষেত্রে প্রায় সম্পূর্ণভাবে মুক্তিও পাওয়া সম্ভব।

চলুন জেনে নিইকিছু কার্যকর এলার্জি দূর করার উপায়ঃ

১. অ্যালার্জেন থেকে দূরে থাকা

এলার্জি প্রতিরোধের সবচেয়ে প্রথম ধাপ হলো অ্যালার্জির কারণ শনাক্ত করা এবং তা থেকে নিজেকে দূরে রাখা।

  • ধুলাবালির এলার্জি থাকলে নিয়মিত ঘর পরিষ্কার করুন, বিছানার চাদর ও পর্দা ধুয়ে নিন।
  • ঘরের মধ্যে গৃহপালিত প্রাণী থাকলে নিয়মিত পরিষ্কার করুন ও ঝাড়ু দিন।
  • বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহার করুন, বিশেষ করে মৌসুমি পরাগরেণুর সময়ে।
  • খাবারের কারণে এলার্জি হলে সেগুলো একদম এড়িয়ে চলুন।

আরও পড়ুনঃ কত ডিগ্রি জ্বর হলে মানুষ মারা যায় জানেন কি?

২. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা

  • অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি খাবার খান (আদা, হলুদ, রসুন, দারচিনি)
  • বেশি করে ভিটামিন C সমৃদ্ধ ফলমূল খান (লেবু, আমলকি, কমলা)
  • দুধ, ডিম বা বাদামে এলার্জি থাকলে বিকল্প খাবার গ্রহণ করুন
  • প্রক্রিয়াজাত বা কৃত্রিম রঙ ও সংরক্ষকযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন
  • প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন
চর্ম এলার্জি দূর করার উপায় কি

৩. ঘরোয়া প্রতিকার

বাড়িতেই কিছু প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে এলার্জির উপসর্গ অনেকটাই কমানো যায়। যা করতে পারেনঃ

  • লোকাল মধু (Raw Honey): নিয়মিত ১ চামচ করে খেলে মৌসুমি এলার্জি প্রতিরোধে সাহায্য করে
  • তুলসি-আদা-লেবু চা: ইনফ্লেমেশন কমায় ও শ্বাসপ্রশ্বাস পরিষ্কার করে
  • নারিকেল তেল: ত্বকে র‍্যাশ বা চুলকানি হলে লাগালে উপশম দেয়

৪. জীবনযাপন ও অভ্যাসের পরিবর্তন

যা করতে পারেন:

  • নিয়মিত ঘুম (প্রতিদিন অন্তত ৭–৮ ঘণ্টা)
  • স্ট্রেস কমাতে মেডিটেশন বা হালকা ব্যায়াম
  • ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহার করুন
  • ঘরের ভেতরে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখুন

৫. চিকিৎসা ও ওষুধ

যদি ঘরোয়া উপায় ও প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপেও চর্ম এলার্জি বা যেকোনো এলার্জির উপশম না হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

সাধারণ ব্যবহৃত চিকিৎসা পদ্ধতি:

  • অ্যান্টিহিস্টামিন ট্যাবলেট বা সিরাপ: হাঁচি, কাশি, চুলকানির উপশমে দ্রুত কাজ করে
  • নাসাল স্প্রে: নাক বন্ধ বা সাইনাসজনিত সমস্যা কমাতে ব্যবহৃত হয়
  • ইমিউন থেরাপি (Allergy Shots): দীর্ঘমেয়াদি প্রতিকার হিসেবে কার্যকর
  • স্টেরয়েড ক্রিম: ত্বকে চুলকানি বা র‍্যাশের জন্য

এতক্ষণে নিশ্চয়ই জানতে পেরেছেন , “এলার্জি কিংবা চর্ম এলার্জি দূর করার উপায় কি?”। এবার কিছু সতর্কতা মূলক বিষয় জেনে নেয়া যাক!

শিশু ও বয়স্কদের এলার্জি বা চর্ম এলার্জি দূর করার উপায়

এলার্জি দূর করার উপায় কিংবা চর্ম এলার্জি দূর করার উপায় নিয়ে আলোচনা করতে গেলে বয়সভেদে যত্নের বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া যায় না কোনো ভাবেই। কারণ শিশু ও বয়স্করাই সাধারণত এলার্জির জন্য বেশি ভোগেন। তাদের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে দুর্বল থাকায় অল্পতেই তারা বেশি সমস্যার শিকার হয়ে যান সহজেই। তাই এই দুই শ্রেণির মানুষের জন্য প্রয়োজন বিশেষ সতর্কতা।

আরও পড়ুনঃ সেরা ১০ টি কিডনি ভালো রাখার উপায়

শিশুদের এলার্জি হলে করণীয় কী?

১. খাদ্যাভ্যাসে সতর্কতা

  • নতুন কোনো খাবার দেওয়ার আগে অল্প পরিমাণে দিন ও প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করুন
  • এলার্জি পরীক্ষা করিয়ে অ্যালার্জিক খাবার চিহ্নিত করুন
  • স্কুল বা দুধ-ডে কেয়ারে জানিয়ে রাখুন কোন খাবারে শিশু এলার্জিক

২. পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা

  • বিছানার চাদর, বালিশ ও খেলনা নিয়মিত পরিষ্কার করুন
  • ঘরে ধুলাবালি যেন না জমে খেয়াল রাখুন
  • শিশুদের ঘরে পোষা প্রাণী এড়িয়ে চলাই ভালো

৩. শ্বাসজনিত সমস্যা নজরে রাখা

  • শিশু যদি ঘন ঘন কাশে বা হাঁচে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি
  • প্রয়োজনে ইনহেলার বা নেবুলাইজার ব্যবহার করতে হতে পারে

বয়স্কদের চর্ম এলার্জি দূর করার উপায়

১. বয়সজনিত রোগের প্রভাব খেয়াল রাখা

  • অনেক সময় এলার্জির উপসর্গ অন্য রোগ (যেমন ঠান্ডা, সাইনাস, হাঁপানি) হিসেবে মনে হতে পারে
  • তাই নিয়মিত চেকআপ করে এলার্জির উৎস বুঝে চিকিৎসা নেওয়া উচিত

২. ওষুধের প্রতিক্রিয়া

বয়স্করা অনেক ধরনের ওষুধ খেয়ে থাকেন, যার মধ্যে কিছু ওষুধ এলার্জিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।

  • নতুন ওষুধ শুরু করার আগে চিকিৎসককে এলার্জির ইতিহাস জানানো উচিত
  • প্রয়োজনে অ্যান্টিহিস্টামিন দেওয়া হলেও ডোজ ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখে নিতে হবে

৩. বাতাস ও আবহাওয়ার প্রতি সংবেদনশীলতা

  • ঠান্ডা বা ধুলাবালির জন্য সহজেই শ্বাসকষ্ট বা ত্বকে সমস্যা হতে পারে
  • মাস্ক ব্যবহার ও ঘর গরম রাখার ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন

আরও পড়ুনঃ সেরা ১০ টি দ্রুত হাই প্রেসার কমানোর উপায়

কখন ডাক্তার দেখানো জরুরি? চর্ম এলার্জি দূর করার উপায়

এলার্জি অনেক সময় হালকা সমস্যা মনে হলেও, অবহেলা করলে এটি গুরুতর শারীরিক জটিলতায় রূপ নিতে পারে। তাই কিছু লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। এলার্জির উপসর্গ যদি স্বাভাবিক ঘরোয়া পদ্ধতিতে বা সাধারণ ওষুধে না সারে, তাহলে চিকিৎসা বিলম্ব না করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

চলুন জেনে নিই, ঠিক কখন ডাক্তার দেখানো উচিতঃ

১. শ্বাসকষ্ট বা গলা বন্ধ হয়ে আসা

  • যদি হঠাৎ শ্বাস নিতে কষ্ট হয়
  • গলা ফুলে যায় বা গলার স্বর পরিবর্তিত হয়
  • বুক চাপ চাপ লাগে

২. তীব্র চুলকানি, র‍্যাশ বা ত্বক ফুলে যাওয়া

যদি ত্বকে হঠাৎ করে লালচে ফুসকুড়ি বা চুলকানি শুরু হয় এবং তা ছড়িয়ে পড়েঃ

৩. বারবার হাঁচি, কাশি বা নাক দিয়ে পানি পড়া

যদি এলার্জির উপসর্গ বারবার দেখা দেয় এবং স্বাভাবিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটায়ঃ

  • যেমন প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রচণ্ড হাঁচি
  • নাক সবসময় বন্ধ থাকা বা পানি পড়া
  • চোখ চুলকানো ও লাল হয়ে যাওয়া

তাহলে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে অ্যালার্জি পরীক্ষা করা উচিত।

৪. কোনো ওষুধ বা খাবার খেয়ে শরীরে প্রতিক্রিয়া

নতুন কোনো ওষুধ, ইনজেকশন বা খাবার খাওয়ার পর যদিঃ

  • চুলকানি, গা ঘামা, বমি ভাব বা শরীর ঝিম ঝিম করে
  • ত্বক লাল হয়ে যায় বা ফুলে যায়

তখন দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে, কারণ এটি Drug Allergy বা Food Allergy-এর লক্ষণ।

৫. শিশু বা বয়স্কদের মধ্যে অস্বাভাবিক আচরণ

  • শিশু খুব কাঁদছে, খেতে চায় না বা নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে
  • বয়স্করা দুর্বলতা অনুভব করছে, শ্বাস নিতে পারছে না বা অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে

এমন পরিস্থিতিতে একদম দেরি না করে চিকিৎসা নিতে হবে।

চিকিৎসকের পরামর্শে যেসব পরীক্ষা করা লাগতে পারে

  • Skin Prick Test (SPT): কোন উপাদানে অ্যালার্জি আছে তা নির্ধারণে সহায়ক
  • IgE Blood Test: রক্তে অ্যালার্জির উপস্থিতি নির্ণয় করতে
  • Spirometry বা পলমোনারি ফাংশন টেস্ট: শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যায় ব্যবহৃত হয়

শেষ কথা

“চর্ম এলার্জি দূর করার উপায় কি? এলার্জির কারণ ও প্রতিকার” শিরোনামে নিয়ে লিখিত জ্ঞানী বাবা!‘র আজকের আর্টিকেলটি আশা করছি আপনাদের ভালো লেগেছে। প্রিয় পাঠক এলার্জি কি? এলার্জি কত প্রকার? এলার্জি কেন হয় থেকে শুরু করে এলার্জি দূর করার উপায় কি? কিংবা চর্ম এলার্জি দূর করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন আশা রাখছি। যদি আজকের এই লেখাটি আপনার ভালো লেগে থাকে, কিছুটা হলেও কাজে এসে থাকে তাহলে আপনার পরিচিত কিংবা পরিবার-পরিজনদের সাথে আজকের এই লেখাটি শেয়ার করতে পারেন। আর কমেন্ট বক্সে আপনার মন্তব্য জানাতে ভুলবেন না কিন্তু!!!

এই আর্টিকেলটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন!

Leave a Comment