মহাসাগর কয়টি ও কি কি? ৫টি মহাসাগরের নাম কি?

আমরা সবাই জানি, পৃথিবীর প্রায় ৭১ শতাংশ অংশ জুড়েই রয়েছে শুধু পানি আর পানি। আর এই পানির অধিকাংশই অবস্থান করছে বিশাল বিশাল মহাসাগরে। এই মহাসাগরগুলো শুধু পৃথিবীর জলরাশিই নয়, বরং জলবায়ু, বাণিজ্য, পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্যের ক্ষেত্রেও অসাধারণ প্রভাব ফেলে আসছে পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকেই।
আমাদের অনেকেই হয়ত জানেন না- “মহাসাগর কয়টি ও কি কি?” যদিও এটি একেবারেই সাধারণ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন, বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও সাধারণ জ্ঞানে আগ্রহী পাঠকদের কাছে তো বিষয়টি খুবই স্বাভাবিক একটা প্রশ্ন ।
জ্ঞানী বাবা!’র আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জানতে চলেছি পৃথিবীর মহাসাগর কয়টি ও কি কি? ৫টি মহাসাগরের নাম কি?, এবং পৃথিবীর সামগ্রিক পরিবেশে মহাসাগরগুলোর ভূমিকা থেকে শুরু করে মহাসাগর কয়টি ও কি কি? এই প্রশ্নের সঠিক, সহজ ও বিস্তারিত উত্তর। তাহলে চলুন, শুরু করা যাক!
সূচীপত্রঃ
মহাসাগর কী? মহাসাগর কাকে বলে?

একদম সহজভাবে বললে, মহাসাগর হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বিস্তৃত ও গভীর জলাশয় যা বিশাল আয়তন নিয়ে পৃথিবীর স্থলভাগকে ঘিরে রেখেছে।
মহাসাগর কাকে বলে?
ভূগোল অনুযায়ী, মহাসাগর হল এমন এক বৃহৎ ও গভীর জলরাশি যা পৃথিবীর বড় বড় স্থলভাগ (মহাদেশ) গুলোর মাঝে বিস্তৃত।
সাগর বনাম মহাসাগর
অনেকেই সাগর আর মহাসাগর শব্দ দুটি এক মনে করেন, কিন্তু এতে একটি বড় পার্থক্য আছে। সাগর সাধারণত মহাসাগরের উপশাখা বা উপকূলবর্তী ছোট জলভাগ যা স্থলভাগ দ্বারা আংশিকভাবে পরিবেষ্টিত থাকে। যেমন, বঙ্গোপসাগর বা আরব সাগর। অন্যদিকে, মহাসাগর স্বতন্ত্র ও বিস্তৃত একক জলভাগ যা কয়েকটি মহাদেশকে পরস্পর থেকে আলাদা করেছে।
মহাসাগরের ভূমিকাগুলি কী কী?
- জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে প্রধান ভূমিকা রাখে
- পৃথিবীর তাপমাত্রা ও আবহাওয়ার ভারসাম্য রক্ষা করে
- বিশাল পরিমাণ অক্সিজেন উৎপাদন করে
- আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য প্রধান পরিবহন পথ
- লক্ষ লক্ষ জীবের আবাসস্থল
কেন মহাসাগর সম্পর্কে জানা জরুরি?
বর্তমান বিশ্বে পরিবেশগত ঝুঁকি, জলবায়ু পরিবর্তন, বরফ গলা এবং সামুদ্রিক দূষণ মহাসাগরগুলোর ওপর অনেক বিরূপ প্রভাব ফেলছে। তাই, “মহাসাগর কয়টি ও কি কি”, এই প্রশ্নের উত্তর জানার পাশাপাশি, এগুলোর রক্ষার গুরুত্বও বোঝা দরকার।
পৃথিবীতে মহাসাগর কয়টি ও কি কি? ৫টি মহাসাগরের নাম
যদি প্রশ্ন করা হয় – “মহাসাগর কয়টি ও কি কি?”, তাহলে এর সোজা-সাপ্টা উত্তর হলোঃ বর্তমানে পৃথিবীতে মোট ৫টি মহাসাগর আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত রয়েছে। অর্থাৎ পৃথিবীতে মোট ৫টিই মহাসাগর আছে।
বহু বছর ধরে ৪টি মহাসাগরকেই (প্রশান্ত, আটলান্টিক, ভারত ও আর্কটিক) মূলধারার ভূগোলে স্বীকৃতি দেওয়া হতো। তবে ২০০০ সালের পর থেকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী “দক্ষিণ মহাসাগর (Southern Ocean)” কেও ৫ম মহাসাগর হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ফলে বর্তমান সময়ে পৃথিবীর মহাসাগরের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫টি।
আরও পড়ুনঃ রাশিয়ার আয়তন কত? রাশিয়া বাংলাদেশ থেকে কত গুণ বড়?
পৃথিবীতে মহাসাগর মোট ৫টিঃ
- প্রশান্ত মহাসাগর (Pacific Ocean)
- আটলান্টিক মহাসাগর (Atlantic Ocean)
- ভারত মহাসাগর (Indian Ocean)
- দক্ষিণ মহাসাগর (Southern Ocean)
- আর্কটিক মহাসাগর (Arctic Ocean)
মহাসাগরগুলোকে কীভাবে আলাদা করা হয়?
মহাসাগরগুলোকে তাদের ভৌগোলিক অবস্থান, পানির তাপমাত্রা, স্রোতের গতি ও পরিবেশগত বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে আলাদা করা হয়। এই পাঁচটি মহাসাগর মিলে তৈরি করেছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড জলজ কাঠামো। আর এই কারণেই “মহাসাগর কয়টি ও কি কি” – এই প্রশ্নটি শুধু সাধারণ জ্ঞানের বিষয় নয়, বরং আমাদের পরিবেশ ও অস্তিত্ব বোঝার এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
৫টি মহাসাগরের নাম কি?

মহাসাগর কয়টি ও কি কি? এই প্রশ্নের উত্তর জানার পর এবার চলুন একে একে জেনে নেওয়া যাক প্রতিটি মহাসাগরের নাম, অবস্থান ও অনন্য বৈশিষ্ট্যগুলো। প্রতিটি মহাসাগরেরই রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন ভূগোল, আবহাওয়া ও নানান বৈচিত্র্য।
১. প্রশান্ত মহাসাগর (Pacific Ocean)
বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং গভীর মহাসাগর হলো প্রশান্ত মহাসাগর। এর আয়তন প্রায় ১৬.৫ কোটি বর্গকিলোমিটার, যা পুরো পৃথিবীর পানির প্রায় ৪৬% অংশ জুড়ে রয়েছে।
- অবস্থান: এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়া এর পশ্চিমে, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার পূর্বে
- গভীরতম স্থান: মারিয়ানা ট্রেঞ্চ (Mariana Trench)
- গুরুত্বঃ
- ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির জন্য পরিচিত ‘Ring of Fire’ এখানে অবস্থিত
- সমুদ্রজীব বৈচিত্র্যে ভরপুর
- বিশ্বের বৃহত্তম বাণিজ্য রুটের অনেকগুলোই প্রশান্ত মহাসাগর ঘিরে
২. আটলান্টিক মহাসাগর (Atlantic Ocean)
আমাদের পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাসাগর হলো আটলান্টিক মহাসাগর, যার আয়তন প্রায় ৮.৫ কোটি বর্গকিলোমিটার। এটি ইউরোপ-আফ্রিকা ও আমেরিকার মাঝে অবস্থিত।
- অবস্থান: পূর্বে ইউরোপ ও আফ্রিকা, পশ্চিমে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা
- বিশেষ বৈশিষ্ট্য:
- মধ্য আটলান্টিক রিজ (Mid-Atlantic Ridge) নামে পরিচিত একটি বিশাল পর্বতশ্রেণী রয়েছে নিচে
- ত্রিভুজ রহস্যের জন্য বিখ্যাত ‘Bermuda Triangle’ এখানেই
- আমেরিকা আবিষ্কারের ইতিহাস এই মহাসাগর ঘিরেই
আরও পড়ুনঃ সেরা ৯টি ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
৩. ভারত মহাসাগর (Indian Ocean)
এই মহাসাগরটি দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জলপথ, যার আয়তন প্রায় ৭ কোটি বর্গকিলোমিটার।
- অবস্থান: উত্তরে এশিয়া, পশ্চিমে আফ্রিকা ও পূর্বে অস্ট্রেলিয়া
- বৈশিষ্ট্য:
- মূলত উষ্ণ ও শান্ত পানি
- দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের বাণিজ্যের প্রধান রুট
- বিশ্বের অন্যতম তেল রপ্তানিকারক অঞ্চল এই মহাসাগরের চারপাশে
৪. দক্ষিণ মহাসাগর (Southern Ocean)
এই মহাসাগরটিই সবচেয়ে নতুন স্বীকৃত মহাসাগর। এটি অ্যান্টার্কটিকার চারপাশে ঘিরে রয়েছে এবং ২০০০ সালের পরপরই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে।
- অবস্থান: দক্ষিণ মহাদেশ অ্যান্টার্কটিকার চারদিকে
- বৈশিষ্ট্য:
- ঠান্ডা ও তীব্র স্রোতের জন্য পরিচিত
- Southern Ocean Current পৃথিবীর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে
- জলবায়ু গবেষণায় অন্যতম গুরুত্ব বহন করে
৫. আর্কটিক মহাসাগর (Arctic Ocean)
এটি পৃথিবীর সবচেয়ে কম আয়তনের মহাসাগর, কিন্তু পরিবেশগত দিক থেকে আবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় সবসময় বরফে ঢাকা থাকে।
- অবস্থান: উত্তর মেরু অঞ্চলে, ইউরোপ, এশিয়া ও উত্তর আমেরিকার মাঝে
- বৈশিষ্ট্য:
- গ্রীষ্মকালে কিছু অংশ গলে যায়
- বিশ্বের জলবায়ুর ভারসাম্য রক্ষায় ভূমিকা রাখে
- মেরু ভাল্লুকসহ অনেক বিশেষ প্রাণীর আবাস
এই পাঁচটি মহাসাগর মিলে পৃথিবীর সুবিশাল সমুদ্রজ জগৎ গঠন করেছে। প্রতিটিই জলরাশিই মানবসভ্যতার জন্য একেকটি প্রাণভরের কেন্দ্র। তাই যখন প্রশ্ন আসে-“মহাসাগর কয়টি ও কি কি?”, তখন শুধু নাম জানা নয়, বরং এগুলোর বিশালতা, বৈচিত্র্য ও গুরুত্বও আমাদের জানা উচিত।
পৃথিবীতে মহাসাগরগুলোর ভূমিকা

আমরা যখন জানতে চাই “মহাসাগর কয়টি ও কি কি”, তখন শুধু নাম জানা যথেষ্ট নয়, জানা প্রয়োজন প্রতিটি মহাসাগরের গুরুত্ব ঠিক কতখানি। এই বিশাল জলরাশিগুলো শুধু পরিবেশ নয়, মানবসভ্যতা, জলবায়ু, অর্থনীতি এবং জীববৈচিত্র্যের সঙ্গেও সরাসরিভাবে জড়িত। নিচে ৫টি মহাসাগরের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরা হলোঃ
১. জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ
মহাসাগরগুলো পৃথিবীর উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণে প্রধান ভূমিকা পালন করে। মহাসাগরগুলোর অপরিমেয় পানি সূর্যের তাপ শোষণ করে রাখে। তাই পৃথিবির তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতেও মহাসাগরগুলোর ভূমিকা অনেক বেশি।
২. আন্তর্জাতিক বাণিজ্য
জেনে অবাক হবেন, বিশ্ব বাণিজ্যের প্রায় ৯০% পরিবহন হয় সমুদ্রপথে। ৫টি মহাসাগরই এই জাহাজ চলাচলের রুট হিসেবে কাজ করে। বিশেষ করে ভারত মহাসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগর এশিয়া-ইউরোপ-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাঝে প্রধান যোগাযোগ পথ।
৩. জীববৈচিত্র্যের আধার
মহাসাগরগুলো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বাস্তুতন্ত্র। মহাসাগরগুলোর অতল গভীরেই রয়েছে লক্ষ লক্ষ সামুদ্রিক প্রাণী, উদ্ভিদ ও জীবের বাসস্থান। মেরিন ইকোসিস্টেম পৃথিবীর অক্সিজেন উৎপাদন ও খাদ্যচক্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৪. পৃথিবীর পানিচক্রে অবদান
মহাসাগর থেকে বাষ্পীভবনের মাধ্যমে তৈরি হয় মেঘ, বৃষ্টি ও তুষারপাত। অর্থাৎ, পৃথিবীর পানিচক্রের মূল ভিত্তিই হলো এই মহাসাগরগুলো। তাছাড়া, সমুদ্রের পানির চলাচল পৃথিবীর আবহাওয়া পরিবর্তনের পেছনেও বড় ভূমিকা রাখে মহাসাগর।
৫. প্রাকৃতিক সম্পদ ও গবেষণার ক্ষেত্র
মহাসাগরের নিচে রয়েছে প্রচুর খনিজ সম্পদ, প্রাকৃতিক গ্যাস, তেল এবং জীববৈচিত্র্য, যা আধুনিক বিশ্বে প্রধান চালিকা শক্তি। আবার, বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য মহাসাগর একটি বিশাল ক্ষেত্রের মতো কাজ করে। বিশেষ করে পরিবেশ, আবহাওয়া, এবং প্রাণিজগতের গবেষণার ক্ষেত্রে।
৬. পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায
মহাসাগর কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে বায়ুমণ্ডলের ভারসাম্য বজায় রাখে। জলবায়ু পরিবর্তন, গ্লোবাল ওয়ার্মিং ইত্যাদি সমস্যা কমাতে এগুলোর ভূমিকা অপরিসীম।
মহাসাগর ও সাগরের পার্থক্য

আমরা অনেক সময় সাধারণ আলোচনায় “সাগর” ও “মহাসাগর” শব্দ দুটি পরস্পরের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করে ফেলি। কিন্তু বাস্তবিকভাবে এই দুটি শব্দ এক নয়। ভৌগোলিকভাবে এদের মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু মৌলিক পার্থক্য।
পৃথিবীতে মহাসাগর কয়টি ও কি কি?, এই প্রশ্নের উত্তর জানার পাশাপাশি আমাদের জানা প্রয়োজন, এই মহাসাগরগুলো কিভাবে সাগরের থেকে আলাদা।
মহাসাগর (Ocean)
- পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহৎ ও গভীর জলভাগ
- একাধিক মহাদেশকে আলাদা করে
- স্বতন্ত্র নাম ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত
- উদাহরণ: প্রশান্ত মহাসাগর, আটলান্টিক মহাসাগর
সাগর (Sea)
- মহাসাগরের তুলনায় ছোট, কম গভীর ও স্থলভাগ ঘেরা
- প্রায়ই মহাসাগরের শাখা বা উপদ্বীপ ঘেরা অঞ্চল
- স্থানীয় বা আঞ্চলিক গুরুত্ব বেশি
- উদাহরণ: বঙ্গোপসাগর, আরব সাগর, লোহিত সাগর
একনজরে সাগর বনাম মহাসাগর
বিষয়ের নাম | মহাসাগর (Ocean) | সাগর (Sea) |
---|---|---|
আয়তন | অনেক বেশি, বিশাল জলভাগ | অপেক্ষাকৃত ছোট ও সীমিত এলাকা |
গভীরতা | গড়ে ৩,৭০০ মিটার বা তারও বেশি | গড়ে ২০০-১,০০০ মিটার |
পরিবেষ্টিত | খোলা ও বিস্তৃত, কোন স্থলবেষ্টনী নেই | স্থলভাগ দ্বারা পুরোপুরি বেষ্টিত |
প্রভাব | বৈশ্বিক পরিবেশ ও বাণিজ্যে গুরুত্ব অসীম | আঞ্চলিক পরিবেশ ও বাণিজ্যে গুরুত্বপুর্ণ |
সংখ্যা ও নাম | ৫টি | অনেক বেশি (যেমন: বঙ্গোপসাগর, লোহিত সাগর) |
মহাসাগর নিয়ে মজার কিছু তথ্য
“মহাসাগর কয়টি ও কি কি?”এই প্রশ্নের উত্তর জানার পর অনেকেই মহাসাগর নিয়ে কিছু চমকপ্রদ তথ্য বা ফ্যাক্ট জানতে চাইতে পারেন। তাই চলুন জেনে নিই কিছু মজার ও অবাক করা তথ্যঃ
১. মহাসাগরের নিচে আগ্নেয়গিরি!
আমরা হয়তো ভাবি সমুদ্রপৃষ্ঠের নিচে শুধু পানি আর পানি। কিন্তু বাস্তবে, মহাসাগরের তলদেশে রয়েছে বিশাল পর্বতমালা (Mid-Ocean Ridge), গভীর উপত্যকা (Trenches), এমনকি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি!
বিশ্বের দীর্ঘতম পর্বতশ্রেণী হচ্ছে মিড-অ্যটলান্টিক রিজ (Mid-Atlantic Ridge), যা সমুদ্রের নিচে প্রায় ৬৫,০০০ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত!
২. পৃথিবীর ৭০% এরও বেশি মহাসাগর
আমরা যতটুকু ভূমিতে বাস করি, তার চেয়ে অনেক বেশি জায়গা জুড়ে রয়েছে মহাসাগর। পৃথিবীর মোট পৃষ্ঠের প্রায় ৭১% জুড়ে রয়েছে এই বিশাল জলরাশি যেগুলোকে আমরা মহাসাগর নামে চিনি।
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পদবী তালিকা জেনে নিন
৩. পৃথিবীর অর্ধেকের বেশি অক্সিজেন দেয় মহাসাগর
আমরা মনে করি, গাছপালাই বুঝি পৃথিবীর জন্যে প্রয়োজনীয় বেশি অক্সিজেন তৈরি করে, কিন্তু জেনে অবাক হবেন সমুদ্রের শৈবাল (phytoplankton) পৃথিবীর মোট অক্সিজেনের ৫০%-৮০% উৎপন্ন করে! অর্থাৎ, আমরা যে বাতাসে নিঃশ্বাস নিচ্ছি তার বড় একটা অংশই আসে মহাসাগর থেক।
৪. মহাসাগরের তলদেশ রহস্য
চাঁদ বা মঙ্গল গ্রহ নিয়ে যত গবেষণা হয়েছে, তার চেয়ে অনেক কম গবেষণা হয়েছে মহাসাগরের তলদেশ নিয়ে। আজও পৃথিবীর ৮০% মহাসাগরীয় এলাকা অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে। যেন এক বিশাল রহস্যের রাজ্য!
৫. Bermuda Triangle
আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত Bermuda Triangle নামে পরিচিত একটি জায়গা আছে যেখানে বহু জাহাজ ও বিমান নিখোঁজ হয়ে গেছে। এর চারপাশে আজও রহস্য ও তত্ত্বের আবরণ জড়ানো (যদিও বেশিরভাগই অতিরঞ্জিত)।
৬. পৃথিবীর সবচেয়ে ঠান্ডা মহাসাগর
আর্কটিক ও দক্ষিণ মহাসাগর, এই দুই মহাসাগরের পানির তাপমাত্রা এতটাই ঠান্ডা যে প্রায় সারা বছরই বরফে ঢাকা থাকে। তবুও এখানে বহু অভিযোজিত প্রাণী যেমন: মেরু ভাল্লুক, সিল, পেঙ্গুইন ইত্যাদি বাস করে।
৭. সমুদ্রপথেই বহন হয় বিশ্ব বাণিজ্যের প্রায় ৯০%
বিশ্বের পণ্য, কাঁচামাল ও জ্বালানির একটি বিরাট অংশ মহাসাগরের পথেই এক দেশ থেকে আরেক দেশে যায়। মহাসাগর ছাড়া আধুনিক বিশ্ব বাণিজ্য প্রায় অচল।
মহাসাগরের নিজস্ব শব্দজগত!
মহাসাগরের নিচে এক আশ্চর্য জগত রয়েছে যেখানে তিমি, ডলফিন, অক্টোপাস প্রভৃতি প্রাণী নানা রকম শব্দে যোগাযোগ করে থাকে। কিছু তিমির আওয়াজ একাধিক কিলোমিটার দূর থেকেও শোনা যায!
শেষ কথা
জ্ঞানী বাবা!’র আজকের আর্টিকেলে আমরা জানলাম, মহাসাগর কি?, মহাসাগর কয়টি ও কি কি?, ৫টি মহাসাগরের নাম, মহাসাগর কয়টি ও কি কিও সাগর ও মহাসাগরের পার্থক্য কি?, থেকে শুরু করে মহাসাগর কয়টি ও কি কি? এ প্রশ্ন সম্পর্কিত যাবতীয় প্রায় সকল কিছু। আশা করি পাঠক বেশ ভালো করেই জানতে পেরেছেন কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে।
তাই, পরিশেষে এতটুকুই বলব, আশা করি জ্ঞানী বাবা!‘র আজকের এই লেখাটি আপনার ভালো লেগেছে। যদি তাই হয়ে থাকে, আজকের এই লেখাটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে , একটু হলেও উপকারে এসে থাকে তবে অনুরোধ করব, সামাজিক মাধ্যমে এই ব্লগটি শেয়ার করুন। আর কমেন্ট সেকশনে আপনার মূল্যবান মতামত রেখে যেতে একদম ভুলবেন না কিন্তু!!!